মিতু আহমেদ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন ভক্তকূল। মর্ত্যে ‘বাবার বাড়ি’ বেড়ানো শেষে ঘোড়ায় চড়ে ‘কৈলাসে দেবালয়ে’ ফিরেছেন আনন্দময়ী দেবী দুর্গা। মায়ের কাছে অশুর শক্তির বিনাশের প্রার্থনা করেছেন ভক্তরা। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) দেবীর বিদায়ের পূর্বে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন নারীরা। সকাল থেকে দেবী দুর্গার চরণের সিঁদুর নিয়ে নিজেদের রাঙিয়ে তোলেন তারা। নগরীর রামকৃষ্ণ মিশন, আমলাপাড়া পূজা মন্ডপ, সাহাপাড়া পূজা মন্ডপ, নতুন পালপাড়া পূজা মন্ডপ, নতুন নয়া মাটি পূজা মন্ডপসহ বেশ কিছু মন্ডপে চলে ভক্তদের আরতি ও রঙের হোলি খেলা। পরম ভক্তি নিয়ে নিজ নিজ মনের বাসনা জানিয়ে নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে সিঁদুর পরান এবং মিষ্টি মুখ করান। পরে মন্দিরে আগত নারীরা একে অপরের সিঁথিতে সিঁদুর বিনিময় করেন। এরপর বিসর্জনের জন্য সধবা নারীরা দেবীকে সাজান ফুল, সিঁদুর ও নানা অলঙ্কার দিয়ে। একদিকে দেবীকে বিদায়ের বিষাদ অন্যদিকে, সিদুর খেলার আনন্দ। সকল পূজা মন্ডপগুলোতে যেন বিষাদ-আনন্দের মিশ্র অনুভূতি বিরাজ করে। প্রতিমা বিসর্জনে বিকেল থেকেই বিভিন্ন মন্ডপগুলো থেকে প্রতিমা বের করা শুরু হয়। বিসর্জন দিতে নানান রকমের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভক্তরা।
ট্রাক ও ভ্যানে করে প্রতিমা নিয়ে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে আনন্দ শোভা বের হয়। এ শোভাযাত্রায় ভক্তদের নাচ-গানে মুখর হয়ে উঠে চারপাশ। রং ছিটিয়ে ও ঢাকঢোল, বাঁশিসহ নানান বাদ্যযন্ত্রের সাথে উলুধ্বনিতে পরিবেশ উৎসবমুখর করে তোলেন। শোভাযাত্রাগুলো নগরীর বিআইডব্লিউটিএ‘র ৩নং ঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়।
সন্ধ্যার পর থেকে নগরীতে শীতলক্ষ্যা নদীতে প্রতিমা বির্সজন দেওয়া শুরু হয়। একই সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া শুরু হয়। নগরীর বিআইডব্লিউটিএ‘র ৩নং ঘাটে প্রশাসন-পুলিশের নিরাপত্তায় এবং নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার আয়োজন করা হয়। এ ঘাটে প্রথমে রামকৃষ্ণ মিশনের মন্ডপের প্রতিমা বিসজর্ন দেওয়া হয়। একে একে বিভিন্ন মন্ডপ থেকে শোভাযাত্রা এসে, ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।