মোঃ আলী শেখ, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার :
এখন রাত ৮ টা ৩০ মিনিট রাজৈর থানার মোড়ে উম্মেহানি ক্লিনিকের সামনে ঝাল মুড়ি বিক্রি করছে একটি শিশু। নাম রোমানা আক্তার। যখন আমাদের সন্তানেরা এই শীতের রাতে ঘরে পড়ার টেবিলে বা বিছানায় বসে রিমোট হাতে টেলিভিশন দেখছে ঠিক তখন শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে দশ বছর বয়সেই শিশু রোমানা পরিবারের হাল ধরেছে।
রোমানার সাথে কথা বলে জানা গেছে, রোমানার বাবা নেই মা মানসিক ভারসাম্যহীন। রোমানা রাজৈর শিশু কল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
রোমানার দৈনন্দিন রুটিন জানতে চাওয়ায় জানান, সকালে মক্তবে পড়ে বাসায় গিয়ে রান্না করে খাওয়া শেষ করে স্কুলে যায়। আবার স্কুল শেষে বাসায় এসে দুপুরের রান্না করে মা ও ভাইকে নিয়ে খাওয়া- দাওয়া শেষ করে চলে আসে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে। রোমানার থাকার কোনো নিজস্ব ঘর নেই ভাড়া বাসায় মা ও ভাইকে নিয়ে থাকে। রোমানার আয় দিয়েই নিবু নিবু ভাবে চলছে জীবনের চাকা।জীবন যেন এখানে নিষ্ঠুর এক বাস্তবতা।রোমানা আমাদের সমাজকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বোঝাচ্ছে । জীবন থেমে থাকার নয়। জীবন মানেই সংগ্রাম।
যে বয়সে একটি শিশু বাবা মায়ের আদর আহ্লাদে বেড়ে ওঠে ঠিক সেই বয়সেই তাকে ধরতে হয়েছে পরিবারের হাল।অদম্য এ শিশু যেন হতাশাগ্রস্থ সমাজের জন্য এক টুকরো আলোর বিচ্ছুরণ। আশা জাগানিয়া বাস্তবতার অমিত সম্ভাবনা।
আমাদের প্রলেতারিয়েত সমাজ ব্যবস্থায় রোমানা যেন অট্ট হাসি দিয়ে জানিয়ে দিচ্ছে আমাদের সত্যিকারের মানবিক দৈন্যতা ও সামাজিক বৈকল্য। আমরা নিজেদেরকে যারা সামাজিক জীব হিসেবে আখ্যায়িত করি , আসুন তারা সবাই মিলে এরকম রোমানাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করি।রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণে নিজেদের সম্পৃক্ত করে ঋণমূক্ত হওয়ার চেষ্টা করি।